যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলোতে ঈদ ও কিছু কথা
প্রকাশিত : ১৫:৫৯, ৬ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১৬:১৩, ৬ জুন ২০১৯
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো কিলোমিটার দূরের একটি শহর। শহরটির নাম বাফেলো। এটিকে আমেরিকার বুকে ছোট্ট এক টুকরো বাংলাদেশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
আপনি শুনে অবাক হবেন এই বাফেলোতে বাঙালিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। প্রবাসী বাংলাদেশিরাই নিয়ন্ত্রণ করছে সেই শহরের ব্যবসা বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রায় সব কিছুই!
তবে আমেরিকা-কানাডা সীমান্তে অবস্থিত বাফেলো নামের শহরটা ছবির মতো এত সাজানো গোছানো ছিল না। এই শহরে বিশ বছর আগেও বাঙালিদের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। কিন্ত এখন এই শহরে গেলে শ্বেতাঙ্গ খুঁজে পাওয়াটাই হবে কষ্টের।
নব্বইয়ের দশক থেকে এই শহরে বাংলাদেশিদের আগমন শুরু হয়। ওই সময় বাংলাদেশি প্রবাসীদের অনেকেই নিউইয়র্ক ছাড়তে শুরু করেন। কেউ কেউ চলে যান মিশিগানে, আবার কেউ কেউ পাড়ি জমান নিউইয়র্ক থেকে কয়েক ঘন্টা দূরত্বের শহর বাফেলোতে।
বাফেলো শহরটা তখন ছিল সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। চোর, ডাকাত, ড্রাগ ডিলার থেকে শুরু করে খুনি, সব ধরণের অপরাধীরাই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতো এই শহরে।
শহরের বাসিন্দা ছিল খুবই কম, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই দোকানপাট বন্ধ করে সবাই ঘরে ঢুকে যেতো। শহরের অধিবাসীদের অনেকেই চলে গিয়েছিলেন শহর ছেড়ে, তাদের বাড়িঘরগুলো পড়ে ছিল পরিত্যক্ত অবস্থায়।
আগের তুলনায় বাফেলোর চিত্রটা অনেক পাল্টে গেছে। বর্তমানে বাফেলো শহরে প্রায় ৩০ হাজারের উপরে বাঙালি তথা বাংলা ভাষাভাষী লোকজন বসবাস করে। যেখানে রয়েছে, মুদি দোকান , বাংলা ভাষার ডাক্তার ছাড়াও বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে অধ্যাপক ও প্রভাষক।
প্রসঙ্গ ছিলো বাফেলোতে ঈদ। গত তিন বছর ধরে এ শহরে ঈদ করছি। অনেকটা দেশের মতোই। এটাই আনন্দ, এটাই খুশি। আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্য থেকে এখানে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে এখান থেকে চলে যাওয়া সংখ্যাটা খুবই কম।
আমার মত অনেকেই বিগত সময়ে যারা নিউইয়র্ক বসবাস করতেন তাদের মধ্যে হতাশা দেখা গেছে। তাদের মধ্যে মানসিক, শারীরিক টেনশন দেখা গেছে। তাদের মধ্যে বাসা ভাড়ার চাপ, গাড়ি পার্কিং করার চাপ, বাচ্চাকে স্কুলে আনা নেওয়ার চাপ। এসব চাপের মধ্যে অনেকেই বাফেলো শহরে এসে পাড়ি জমিয়েছে।
ভিডিও
লেখক: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাইয়িদ মাহমুদ তসলিম।
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।